কোনোরকম সমীকরণের পথে হাঁটতে হচ্ছে না বাংলাদেশকে। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের জয়ের অর্ধেক কাজটা আগেই এগিয়ে রেখেছিলে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ। বাকি কাজটা সারেন বোলার শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শান্ত ও মিরাজের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করে। মাঝখানে সাকিব ও মুশফিক ছোট্ট দুটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন। শান্ত ১০৫ বলে ২ ছয় ও ৯ চারের সাহায্যে ১০৪ রান এবং মিরাজ ১১৯ বলে ৩ ছয় ও ৭ চারে ১১২ রান করেন। জবাবে আফগানিস্তান সব উইকেট হারিয়ে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান ৭৫ ও অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শাহিদী ৫১ রান করেন।

টস জিতে এদিন আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাটিংয়ের শুরুতেই আফগানদের চমকে দিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজকে মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে ওপেনিং করতে পাঠান। এ দুজন মিলে ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৬০ রান তোলেন। এরপর নাঈম আউট হয়ে গেলে ভাঙে জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে নেমে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হন তাওহিদ হৃদয়।

তৃতীয় উইকেট ‍জুটিতে শান্ত ও মিরাজ মিলে গড়েন ১৯৪ রানের জুটি। এতে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় টাইগাররা। মিরাজ ১১২ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যান। এর আগে অবশ্য ১১৯ বলে ৭ চার ও ৩ ছয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন। মিরাজ অপরাজিত থাকেন ১১২ রান করে। এরপর দলীয় ২৭৮ রানে ক্যারিয়া দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে বিদায় নেন শান্ত। তিনি ১০৫ বলে ২ ছয় ও ৯ চারে করেন ১০৪ রান।

এরপর মুশফিক ১৫ বলে ২৫ রান করেন। আর সাকিব ১৮ বলে ১ ছয় ও ৪ চারে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। অভিষিক্ত শামিম ৬ বলে করেন ১১ রান। আফগানিস্তানের হয়ে মুজিব ও গুলবাদিন নাঈব একটি করে উইকেট নেন। টাইগারদের তিন ব্যাটার রান আউটের শিকার হন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে ১ রান তুলতেই রহমাতুল্লাহকে ফেরান পেসার শরীফুল। দ্বিতীয় উইকেটে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় রহমত শাহ ও ইব্রাহিম জাদরান জুটি। দলীয় ৭৯ রানে রহমত শাহকে বোল্ড করে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান তাসকিন। অপরপ্রান্তে সাবলীল ভঙিতে ব্যাট চালাতে থাকেন ইব্রাহিম। দলীয় ১৩১ রানের সময় তৃতীয় উইকেট হিসেবে ইব্রাহিম হাসান মাহমুদের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ফেরত যান। এর আগে তিনি ৭৪ বলে ১ ছয় ও ১০ চারে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন।

পরে আফগান অধিনায়ক কিছুটা চেষ্টা চালান। কিন্তু তাকে যোগ্য সহায়তা কেউ করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তিনি দলীয় ১৯৬ রানের সময় ৬০ বলে ৬ চারে ৫১ রান করে শরীফুল ইসলামের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। এরপর লেজের অংশ পুরোটা ছেঁটে ফেলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মাঝে এক উইকেট তুলে নেন সেঞ্চুরিয়ান মিরাজ। বাংলাদেশ জয় পায় ৮৯ রানে।

ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি ও বল হাতে এক উইকেট নেয়ায় প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান মেহেদি মিরাজ। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৪টি ও শরীফুল ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান হাসান ও মিরাজ।